রাজীব ঘোষ:- সম্প্রতি রাজ্যের প্রায় ১০০ টি পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পরিস্থিতিতে পুরসভার নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় পুরসভা গুলিতে প্রশাসক বসাতে চলেছে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। ইতিমধ্যে কলকাতা পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
শিলিগুড়ির মেয়র এবং বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যকে প্রশাসক নিয়োগ করেছে পুর দপ্তর। জুন মাসে তাহেরপুর ও জয়নগর-মজিলপুর পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিরোধীদলের চেয়ারম্যানদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করতে পারে রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের অবস্থান প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, যে পুরসভায় যারা ক্ষমতায় আছেন সেই চেয়ারম্যানকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করে কাজ চালাতে চায় রাজ্য সরকার। তারা রাজ ধর্ম পালনে বিশ্বাসী। এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান বলেন, এই ঘটনাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের দ্বিচারিতা প্রকাশ পেয়েছে। এ যেন হিটলারের প্রেতাত্মার রাজধর্ম পালন।
এক বিবৃতিতে আব্দুল মান্নান বলেন, কলকাতাসহ ১০০ টি পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে যেভাবে সরকারি আধিকারিকদের নিয়োগ না করে দলীয় মেয়র এবং চেয়ারম্যানদের প্রশাসক পদে নিয়োগ করা হচ্ছে, সেটা সর্বত্র নিন্দিত এবং ঘৃণিত। নিজেদের স্বৈরাচারী কার্যকলাপের ঘৃণ্য অপবাদ কে চাপা দিতে হঠাৎ রাজ্য সরকারের রাজ ধর্মের কথা মনে পড়েছে।
জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিরোধী দল দ্বারা পরিচালিত অনেক পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ সম্পূর্ণ গায়ের জোরে স্বৈরাচারী কায়দায় সরকারি ক্ষমতা প্রয়োগ করে সব দখল করে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে ভুয়া মামলা দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলের জিতে আসা সমস্ত সদস্যদের।
বিধায়ক সহ পুরসভার কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সদস্য, জেলা পরিষদ সদস্যদের এইভাবে দলবদল করানো হয়েছে। মামলা এবং খুনের হুমকি দিয়ে প্রকাশ্য জনসভায় বিরোধীদলের সদস্যদের তৃণমূলে যোগদান করানো হয়েছে। তারপরেও সংবিধান মেনে তাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি পদ খারিজ করা হয়নি। এখন তৃণমূল কংগ্রেস তিনটি পুরসভার বিরোধী দলের চেয়ারম্যানদের প্রশাসক নিয়োগ করে নিজেদের অপবাদ ঘোচাতে চাইছে। বিড়াল তপস্বী সেজে জনগণকে তারা বিভ্রান্ত করতে চাইছে।
সরকারের উদ্দেশ্য, নিজেদের অপকর্মে বিরোধীদলকে শরিক করা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করে কার্যত হিটলারের প্রেতাত্মার রাজ ধর্ম পালনের সঙ্গে তুলনা করেছেন বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান।